42 তম সংবিধান সংশোধনী
1976 সালের 42 তম সংবিধান সংশোধনী আইনে ভারতীয় সংবিধানের ব্যাপক অংশকে পরিবর্তন, সংশোধন ও সংযোজন করা হয়। স্বাধীনতার পর ভারতে সংবিধানকে এত ব্যাপকভাবে আর কখনো সংশোধিত করা হয়নি। অনেকে এই সংশোধনীকে মিনি কনস্টিটিউশন (Mini Constitution)বলেও অভিহিত করেন। মূলত এই সংবিধান সংশোধনী টি স্মরণ সিং কমিটির সুপারিশ অনুসারে সংশোধিত হয়।42 তম সংবিধান সংশোধনী টি 11 ই নভেম্বর 1976 সালে ভারতের পার্লামেন্টে পাস হয়।এই সংশোধনীটি 18 ডিসেম্বর 1976 সালে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাভ করে ।3rd জানুয়ারি 1977 সালে এই সংশোধনীটি কার্যকর হয়।এই সংশোধনী পাস করার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ও ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন ফখরুদ্দিন আলি আহমেদ।
Amended provisions of the constitution : সিদ্ধান্ত সমূহ
- এই সংশোধনীতে ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় তিনটি শব্দ যুক্ত করা হয় যথা 1) সমাজতান্ত্রিক, ২) ধর্মনিরপেক্ষ ৩) সংহতি।
- ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক কর্তব্য নামক একটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয় Part-iv ,51(A).
- ভারতের রাষ্ট্রপতি ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য থাকবেন।
- এই সংশোধনীতে প্রশাসনিক আদালত নামে এক নতুন ধরনের বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। (Part- xiv/A)
- 1971 সালের জনগণনা অনুযায়ী 2001 সাল পর্যন্ত লোকসভার সদস্য সংখ্যা স্থির করা হয়।
- সংবিধান সংশোধন কে বিচার বিভাগের আওতার বাইরে রাখা হয়।
- সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচার বিভাগীয় সক্রিয়তা ও লেখ জারি ক্ষমতাকে সীমিত করা হয়।
- লোকসভা ও বিধানসভার কার্যকালকে পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে 6 বৎসর করা হয়।
- নির্দেশমূলক নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোন আইন তৈরি হলে যদি সেটা মৌলিক অধিকারকে খর্ব করে তাহলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে না।
- Anti National activity বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের অধিকার পার্লামেন্ট কে দেওয়া হয় এবং তা যদি মৌলিক অধিকার খর্ব করলেও তা বৈধ বলে গণ্য হবে।
- জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষেত্রে নিয়মের সংশোধন করা হয়।
- রাষ্ট্রপতি শাসন এর সময়সীমা এককালীন 6 মাস থেকে বাড়িয়ে এক বছর করা হয়।
- আইন শৃঙ্খলা অবনতি প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের যেকোনো জায়গায় সশস্ত্র সেনা পাঠাতে পারবে।
- এই সংশোধনীতে পাঁচটি বিষয়কে যুগ্ম তালিকাভুক্ত করা হয়। যথা শিক্ষা, বনদপ্তর, ওজন ও পরিমাপ, বন্যপ্রাণী ও পাখি সংরক্ষণ, বিচার বিভাগীয় প্রশাসন।
- পার্লামেন্ট ও রাজ্য আইনসভার বিল পাসের পদ্ধতি বা কোরাম পদ্ধতির পরিবর্তন করা হয়।
- পার্লামেন্টের সদস্য ও বিভিন্ন কমিটির সদস্যদের অধিকার ও সুযোগ সুবিধা সময় অনুযায়ী পার্লামেন্ট ঠিক করার কথা বলা হয়।
- All- India Judicial service এর গঠন করা হয়।সিভিল সার্ভেন্ট এর শাস্তি দানের প্রক্রিয়ার সংক্ষিপ্ত করণ করা হয়।
- তিনটি নতুন নির্দেশমূলক নীতির সংযোজন ঘটানো হয় যথা—-
- ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও দিন দরিদ্রের জন্য বিনা অর্থে আইনগত সাহায্য দান।
- শিল্প-কারখানার প্রশাসনে শ্রমিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ।
- রাস্ট্র পরিবেশ, বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করবে।