polscience.in

Linkage Theory

Linkage Theory

 Linkage Theory

আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও সম্পর্কের বিশ্লেষণে একটি উল্লেখযোগ্য তত্ত্ব হলো Linkage theory। এই তত্বের অন্যতম প্রবক্তা হলেন James N. Rosenau তিনি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ linkage politics: Thee scientific study of foreign policy নামক গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন।
 Linkage বলতে James N. Rosenau এমন এক ধরনের সংগঠন ও আচরণ কে বুঝিয়েছেন যা এক ব্যবস্থা থেকে উদ্ভূত হয় এবং অপর ব্যবস্থাতেও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে জাতীয় রাষ্ট্রকে Linkage theory এর মূল একক বা বিষয়বস্তু হিসেবে অভিহিত করা হয়। তার মতে কোন দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার কোন ঘটনার সৃষ্টি হলে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাতেও তার প্রভাব দেখা যায়। তার মতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

 Rosenau Linkage Theory তে দুটি পর্যায়ে ভাগ করেছেন।

  1. প্রারম্ভিক পর্যায়ে বা প্রাথমিক পর্যায়ে
  2. মূল বা পরিসমাপ্তি পর্যায়।

এই প্রাথমিক পর্যায়ে উপকরণ এবং পরিসমাপ্তি পর্যায়ে উপপাদ্ বলে অভিহিত করা হয়। এই উপকরণ বা উপপাদ্ গুলিকে আবার দুইটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা

  1. Polity input or output
  2. Environmental input output

উপকরণ বা উপপাদ কোথায় সংঘটিত হচ্ছে তার ওপর এর চরিত্র নির্ভর করে। যদি কোন ঘটনা জাতীয় রাষ্ট্রে উৎপন্ন হয় এবং বাহ্যিক পরিবেশে প্রভাব বিস্তার করে তাহলে তা পলিটি ইনপুট হিসেবে পরিচিত লাভ করে। আবার যদি কোনো ঘটনা বা যে পরিবেশে উৎপত্তি লাভ করুকনা কেন তা জাতীয় রাষ্ট্রে প্রভাব বিস্তার করে তাহলে তাকে Environmental output বলা হয়। James N. Rosenau তার Linkage theory ব্যাখ্যায় তিনি পরিবেশ বলতে সামগ্রিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে বুঝিয়েছেন এবং একটি জাতীয় রাষ্ট্রকে একক হিসেবে কল্পনা করেছেন। তার মধ্যে কোন ঘটনা প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যবস্থায় উৎপন্ন হয় সেটি অপর ব্যবস্থায় উপকরণ হিসেবে কাজ করে আবার কোন ঘটনা প্রাথমিকভাবে উপকরণ হিসেবে কাজ করলে অপর ব্যবস্থায় সেটি উপপাদ্ হিসেবে কাজ করে।

James N. Rosenau এই দুই ধরনের উপকরণ ও উপপাদ্ কে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ এই দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যদি কোন input ও output ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় এমন ভাবে প্রভাব সৃষ্টি করে যাতে করে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় জাতীয় ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় তবে সেটি direct input and output বলা হয়। অপরদিকে input and output ইচ্ছাকৃত ভাবে সৃষ্টি হয় না অথচ তার এটি বিভিন্ন স্তরের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এটি হলো indirect input and output.

James N. Rosenau Linkage theory কে তিন ভাগে ভাগ করেছেন

  1. Penetrative
  2. Reactive
  3. Emulative

 

Rosenau এর মতে একটি রাষ্ট্র হল যখন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারী হিসেবে কাজ করে এবং কতগুলি মূল্যের কর্তৃত্ব সম্পন্ন বরাদ্দের ক্ষমতা দ্বিতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে দিয়ে থাকে তখন তার pentrative Linkage এক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাষ্ট্রটি সেইভাবে নীতি নির্দেশিকা দিয়ে থাকে প্রথম রাষ্ট্রটি তা মেনে নেয় .উদাহরণ হিসেবে বলা যায় একটি দেশের দখলদার বাহিনীর কার্যকলাপ আবার সেই দেশ মেনে নেয় সেটাকে Penetrative Linkage বলে। যখন কোন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া বা পরিপ্রেক্ষিতে যদি কোন ব্যবস্থাকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় তখন তাকে Reactive Linkageবলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় 1998 সালের 11 ই মে ও 13 ই মে ভারতের পক্ষ থেকে পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো পাকিস্তান তার কয়েক দিনের মধ্যেই এরূপ বিস্ফোরণ ঘটায়। আবার ঠান্ডা যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন একে অপরের কার্যাবলী তে অসন্তুষ্ট হয়ে সৈন অস্ত্রশস্ত্র বৃদ্ধি করতে থাকে।

James N. Rosenau এটি কি প্রকার Linkage হলো Reactive linkage তার একটি রূপ অর্থাৎ যখন কোন একটি রাষ্ট্রের অপর একটি রাষ্ট্রের আউটপুট ব্যবস্থায় পরিণত হয় না কিন্তু রাষ্ট্রটি যদি অপর ব্যবস্থার আউটপুটের স্বরূপ আউটপুট সরবরাহ করে তখন তাকে Emulative linkage বলা হয়। ব্রিটিশ সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অনুরূপ ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের ব্যবস্থার বিকাশ সম্ভব হয়েছে।

Linkage Theory র সুবিধা 

  1. এই দৃষ্টিভঙ্গির একটি মূল্য নিরপেক্ষ অভিজ্ঞতাবাদী তত্ত্ব রাষ্ট্রগুলির প্রকৃত আচরণের ধরন কি এবং রাষ্ট্র পরিবেশের মিথস্ক্রিয়া কি তা পর্যালোচনা করে।
  2. এই তত্ত্ব টি জাতীয় রাষ্ট্রের সীমা কে অস্বীকার করে না আবার আতঙ্কিত করে না তাই জাতীয় রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে পাশাপাশি গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষণ করা হয়।
  3. এই তত্ত্ব টি একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্বব্যবস্থা চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম তত্ত্বটি জাতীয় আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার মধ্যে প্রতিটি মিথস্ক্রিয়া কেউ গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করে।
  4. James N. Rosenau পরিবেশিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ লিংকেজ এর বিষয়টি গুরুত্ব অপরিসীম কারণ কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী থেকে পরিবেশের উপর প্রভাব সৃষ্টি কিন্তু পুনর্গঠন করা হয় তা অনেক তথ্য ধরা পড়ে না কিন্তু আলোচনা করা হয়।
  5. অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয়ভাবেই যে ভেরিয়েবল স্কুল কাজ করে তা গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।
Linkage Theory র অসুবিধা

এই তত্ত্ব টি জাতীয়-আন্তর্জাতিক উভয় স্তরের সম্পর্কিত হওয়ার ফলে যে ব্যক্তি জাতীয় রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় যেকোনো একটি ক্ষেত্রে পারদর্শী তার পক্ষে এককভাবে এটাকে ব্যবহার করা সম্ভব নয়।

Linkage theory ছাড়াও ব্যবস্থা জ্ঞাপক সিদ্ধান্ত প্রণয়ন মূলক তত্ত্ব পরিবেশ ও জাতীয় রাজনীতিকে বিশ্লেষণ করার প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে। সুতরাং এই তত্ত্বটি কে মৌলিকতা মৌলিক তত্ত্ব বলে দাবি করা যায় না।

বিভিন্ন সমালোচনা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে এই তত্ত্বর গুরুত্বকে অস্বীকার করা যায় না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতিতে একদিকে প্রাক্তন সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে কমিউনিস্ট ব্লক অপরদিকে মার্কিন রাষ্ট্রের নেতৃত্বে উদারনৈতিক জোট ঠান্ডা যুদ্ধের সূচনা কালে যে পারস্পরিক অবস্থান গ্রহণ করেছিল তা ব্যাখ্যা করতে অনেক ক্ষেত্রেই সাহায্য করেছে। তবে বলা যায় যে ব্যবস্থা জ্ঞাপক তত্ত্ব ও সিদ্ধান্ত প্রণয়ন তত্ত্ব পরিবেশ কে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করলেও একমাত্র বিস্তারিতভাবে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জটিলতা ও রাজনীতি এইটাতেই পাওয়া যায়।

Exit mobile version