
Table of Contents
John Rawls’s Theory of Justice
জন রলস : 1921-2002
Main works– মূল গ্রন্থ :
A Theory of Justice
Justice as fairness
Political liberalism
The laws of peoples
পটভূমি :
জন রলস তার John Rawls’s Theory of Justice রচনার ক্ষেত্রে লক, রুশো কান্ট দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি 1957 সালে প্রকাশিত The Journal of philosophy তে Justice as fairness নামক শিরোনামে সর্বপ্রথম এই ধারণার প্রকাশ করেন। ধ্রুপদী উদারনীতির সংকট ও কাল মার্কসের উদ্বৃত্ত মূল্য তত্ত্ব ন্যায় ধারণা কে সংকটের সম্মুখীন করে। কারণ উৎপাদনের উপর ব্যক্তিগত মালিকানা স্থাপিত হলে সঠিক বন্টন সম্ভব নয় অন্যদিকে মার্কসের উদ্বৃত্ত মূল্য মুনাফার স্বার্থেই উৎপাদন পরিচালিত হয় যা মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পূরণ করে না। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতিতে পুঁজিবাদ ব্যাপক সংকটের সম্মুখীন হয় রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ব্যাহত করে। এই প্রেক্ষাপটেই জন রলস A Theory of Justice নামক গ্রন্থে তার ন্যায় তত্ত্ব টি কে সার্বিকভাবে তুলে ধরেন।
রলসের ন্যায় বিচারের মূল বৈশিষ্ট্য :::::::::::::
মানুষ এক প্রারম্ভিক অবস্থানে ( original position)ছিল। এই অবস্থাকে সামাজিক চুক্তি মতবাদের মতো প্রকৃতির রাজ্যের সঙ্গে তুলনা করা যায় । তবে এটি কোন ঐতিহাসিক অবস্থা নয় । এটি ছিল একটি অনুমান।
প্রারম্ভিক অবস্থানে ব্যক্তির জ্ঞান বা বিচারবুদ্ধি তেমন ভাবে গড়ে ওঠেনি । মানুষের জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধির অপূর্ণতাকে veil of ignorance বা অজ্ঞতার অবগকুন্ঠন বা ঘোমটা বলে অভিহিত করেছেন।
প্রারম্ভিক অবস্থানে অজ্ঞতার অবগকুণ্ঠনের ফলে সে তার সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল না। সে এটাও জানত না যে প্রাকৃতিক সম্পদ কিভাবে বন্টিত হচ্ছে এবং তাতে তার অধিকার আছে কিনা ?
রলসের চুক্তিবদ্ধ মানুষ অজ্ঞ হলেও তাদের কাছে যুক্তি বোধের অভাব ছিল না। এই যুক্তি দ্বারা অজ্ঞতা থেকে ন্যায়-নীতির দিকে অগ্রসর হবে।
এই যুক্তি বোধের কারনে মানুষ অজ্ঞতা ত্যাগ করে সামাজিক চাহিদা যথা স্বাধীনতা,সুযোগ ,আয়, সম্পদ ও আত্মমর্যাদার সঠিক বিন্যাস ঘটুক, তা দাবী করে।
রলস চেয়েছিলেন’ ন্যায্য বন্টন নীতি। তবে এ ধারণা গড়ে তোলার জন্য তিনি প্রতিফলন কারী ভারসাম্যের পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। যেখানে ব্যক্তিগত স্বার্থ,ইচ্ছা,যোগ প্রভৃতির ঊর্ধ্বে উঠে নৈতিক বিশ্বাস কতৃক কাঠামোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝা পড়ার মাধ্যমে সমন্বয় সাধন করে এবং মানুষকে নৈতিকতার দ্বারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে কথা বলেন। উদাহরণস্বরূপ বলেন জন্মদিনের কেক কাটার সময় কে, কিভাবে, কতটা পাবে তার না জানালে কেক টি কে যথাসম্ভব সমানভাবে কাটার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাবে। জন রলস মনে করেন যদি ব্যক্তিবর্গ তাদের প্রাপ্তি সম্পর্কে অবগত থাকলেও নির্দিষ্টভাবে উল্লেখিত না হলে বন্টনের নীতি ন্যায্য হবে। এটি হলো Justice as fairness বা ন্যায় ধারনার সুষ্ঠ প্রকাশ।
রলসের ন্যায় বিচারের নীতি:
প্রাথমিক সামাজিক মূল্যবোধ গুলির মধ্যে যদি বন্টনের বিরোধ সৃষ্টি না হয় সেজন্য রলস দুটি নীতির উল্লেখ করেন । যথা….
১) প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক স্বাধীনতায় সমান অধিকার।( Core principle )
২) সকলের জন্য সঠিক বা ন্যায্য সুযোগের নীতি।(Maximin principle)
প্রত্যেক ব্যক্তির মৌলিক স্বাধীনতায় সমান অধিকার: রলস মনে করেন মৌলিক স্বাধীনতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই প্রত্যেক ব্যক্তি সমাজের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা সমান অংশীদারিত্ব পাবে। তবে ন্যায় এর ক্ষেত্রে ব্যক্তির অধিকার কে বুঝতে হবে ব্যক্তির নিজস্বতার দ্বারা এবং স্বাধীনতাকে বুঝতে হবে সকলের কল্যাণের দ্বারা।
সকলের জন্য সঠিক ও নায্য সুযোগ নীতি : John Rawls’s Theory of Justice এই নীতি কে দুই ভাগে ভাগ করে আলোচনা করেছেন । যথা ….
A) সামাজিক, আর্থিক অসাম্যকে এমনভাবে বিন্যস্ত করতে হবে যাতে প্রত্যেকের সুবিধার্থে কাজ করে এবং বিশেষভাবে অনগ্রসর মানুষের সাহায্যে লাগে। তিনি মনে করতেন যে সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের সুবিধার্থে বা কল্যানে যদি অসাম্য থাকে তবে তাকেও মেনে নিতে হবে।
B) সামাজিক ,আর্থিক অসাম্যের ব্যবস্থাপনা এমন হবে যাতে ন্যায্য সমান সুযোগের অবস্থায় পদ ও কার্যালয় বা অবস্থানের সুযোগ সকলের কাছে উন্মুক্ত থাকে। অর্থাৎ সামাজিক ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা বন্টনের ক্ষেত্রে পদ ও বণ্টনের সমান সুযোগ সকলকে দিতে হবে।
সমালোচনা :
John Rawls’s Theory of Justice বা ন্যায় নীতি তত্ত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ হলেও তা নানাভাবে সমালোচিত হয়েছে রবার্ট নজিক, স্যান্ডেল, ওয়াল জার , অ্যালান ব্লুম ইত্যাদির কাছে।
রলস এর ন্যায় এর কল্পনা কিভাবে ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।
সামাজিক ন্যায় প্রসঙ্গে সমাজের স্বার্থে বা পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বার্থে বিত্তবান শ্রেণীর তাদের স্বার্থ ত্যাগ করবে বা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে তা একটা কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সমতার নীতি বিতর্কে অর্থনীতি সামাজিক ন্যায় বন্টনের অসাম্যকে প্রতিফলিত করে।
মূল্যায়ন :
John Rawls’s Theory of Justice বা ন্যায় তত্ত্ব অনেক সমালোচনা থাকলেও তিনি কখনো সমতার সাথে আপোষ করেননি। তিনি মানুষকে সবসময় আত্ম সর্বস্ব ব্যক্তি হিসেবে না দেখে নৈতিক মানুষ হিসেবে কল্পনা করেছেন। তিনি সমাজের প্রত্যেকটা মানুষকে সমান সুযোগ-সুবিধা পায় তার জন্য পার্থক্য নীতি কে গ্রহণ করেছেন। তবে সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যক্তির মৌলিক স্বাধীনতা ও বিচারের সাথে সমঝোতা করেননি ।